আগে থেকেই গুঞ্জন ছিল ভবিষ্যতে আর থ্রিজি চালু রাখা হবে না। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী এ বিষয়ে একাধিকবার বলেছেন, থ্রিজির আর দরকার নেই। সর্বশেষ খবর হলো, মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আগামীতে তাদের থ্রিজি সেবা পর্যায়ক্রমে সীমিত করে ফেলতে চায়—এমন একটি প্রস্তাবনা টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির কাছে জমা দিয়েছে তারা। এতে বিষয়টি আবারও প্রকাশ্যে আসে। অন্য দুই অপারেটরও এই সেবা চালু না রাখার ইঙ্গিত দিয়েছে।
টুজি আর ফোরজিতেই আগ্রহ বেশি অপারেটরগুলোর। ফাইভজিকে বাণিজ্যিক ব্যবহারে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে গ্রাহককে ফোরজি সেবা দিয়েই অপারেটরগুলো তাদের সেবাদান কার্যক্রম চালিয়ে যেতে চায়। পাশাপাশি ফাইভজিও থাকবে।
এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, আমরা থ্রিজি রাখার প্রয়োজনীয়তা দেখছি না। দেশের প্রায় সব জায়গায় ফোরজি পৌঁছে গেছে। গতিও বেশি। বাজারে ফোরজি সেটও বাড়ছে। আবার এরই মধ্যে ফাইভজি চলে এসেছে। শিগগিরই তরঙ্গ নিলাম হবে। সব অপারেটরই তখন ফাইভজি সেবা দেবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রবি থেকে জানানো হয়, অপারেটরটি পর্যায়ক্রমে থ্রিজির ব্যবহার কমিয়ে আনতে চায়। অপারেটরটির মন্তব্য, গ্রাহক যদি থ্রিজির দামে ফোরজি পান, তবে থ্রিজি ব্যবহার করবেন কেন। রবি এরইমধ্যে এ বিষয়ে একটি প্রস্তাবনা বিটিআরসিকে দিয়েছে। বিটিআরসি এখনও কোনও মন্তব্য করেনি।
অন্য দুই অপারেটর বলছে তারাও থ্রিজি বাদ দেবে। তবে এতে সময় লাগবে। ফোরজি ফোনের ব্যবহার বাড়ানো, আনুষাঙ্গিক অবস্থা, গ্রাহকের ইন্টারনেট ব্যবহারের প্যাটার্ন—ইত্যাদি বিবেচনায় আরও কিছু দিন পর্যবেক্ষণ করতে চায় তারা।
জানতে চাইলে গ্রামীণফোনের হেড অব কমিউনিকেশনস খায়রুল বাসার বলেন, থ্রিজি থেকে ফোরজি মাইগ্রেশন এবং এরই ধারাবাহিকতায় ফাইভজি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ ভিশন অর্জনের গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এই ক্ষেত্রে কী করা যায় তা নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে আসছি আমরা।
বাংলা ট্রিবিউনকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলালিংক জানিয়েছে, বিশ্বের অনেক দেশে এখন থ্রিজিকে ফোরজিতে মাইগ্রেট করা হচ্ছে। কারণ—ইন্টারনেটের গতি ও স্পেকট্রাম (তরঙ্গ) ব্যবহারের দিক থেকে ফোরজি নেটওয়ার্ক বেশি কার্যকর। তবে যেহেতু দেশে ফোরজি উপযোগী স্মার্টফোন মাত্র ৩০ শতাংশ, তাই পরিবর্তনটি আমরা পর্যায়ক্রমে আনতে চাই।
একটি মোবাইল অপারেটরের এক শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, টুজি আর ফোরজিই থাকবে। দেশে ফোরজি সেট ব্যবহারের হার ৩০ শতাংশ। এই হার ৫০-৬০ শতাংশের বেশি না হলে থ্রিজি বাদ দেওয়া যাচ্ছে না। আরও কিছু সময় প্রয়োজন। এটা এখন করা হলে দেখা যাবে ফোরজি ব্যবহার করছেন ঠিকই, কিন্তু ডাটা পাচ্ছেন না।
তিনি আরও জানালেন, সর্বশেষ নিলাম থেকে অপারেটররা যে স্পেকট্রাম কিনেছে সেটার ব্যবহার শুরু হয়েছে। অপারেটরগুলো তাদের বিটিএস (মোবাইল টাওয়ার) ফোরজিতে রূপান্তর করছে। তাদের নিলামে কেনা তরঙ্গের প্রায় ৫০ শতাংশ ব্যবহার হচ্ছে বর্তমানে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।